প্রকাশিত: ২৭/১২/২০১৬ ৯:৪৫ এএম , আপডেট: ২৭/১২/২০১৬ ৯:৪৭ এএম
উখিয়া – টেকনাফ মহাসড়কের পাশে ত্রানের আশায় এভাবে বন- জঙ্গলে অবস্থান নিয়ে রোহিঙ্গারা।

উখিয়া নিউজ ডটকম::

অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের অকাতরে টাকা বিলি করে যাচ্ছে বিলাস বহুল নোহা, কার, মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে আসা কিছু অচেনা অজানা লোকজন। এসব টাকায় তারা তৈরি করছে ঝুঁপড়ি অথবা ভাড়া ঘরে আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুলিশ, বিজিবি সড়কে অবস্থান নিয়েও এসব রোহিঙ্গাদের বস্তিতে ফেরত পাঠাতে পারছে না। উপরোন্তু গতকাল সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রীবাহি গাড়ীতে তল্লাসী চালিয়ে আরো ৩৩ জন অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে ঘুমধুম বিজিবি সদস্যরা। সচেতন মহল দাবী করছেন নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের আহ্বানে অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না।
গতকাল সোমবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং এলাকাঘুরে দেখা যায়, সড়কের ধারে ধারে ১০/১২ জন করে রোহিঙ্গা নারী শিশু উৎপেতে বসে আছে। কোন নোহা, কার অথবা মাইক্রো দাড়ালে এসব রোহিঙ্গা নারী, শিশু গাড়ীর উপর হুমডি খেয়ে পড়ছে টাকার জন্য। গাড়ী চলে যাওয়ার পর দেখা গেল প্রত্যেক রোহিঙ্গা নারী শিশুর হাতে হাজার ও পাঁচশত টাকার নোট। প্রত্যক্ষদর্শী এলাকার সংবাদর্কমী ও উখিয়া নিউজ ডটকমের সম্পাদক ওবাইদুল হক চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের যত্রতত্র ভাবে টাকা ও ত্রাণ বিতরণের ফলে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত রোহিঙ্গা নারী-শিশু রাস্তার ধারে উৎপেতে বসে থাকে। তিনি বলেন, মানবিক কারণে এসব রোহিঙ্গাদের টাকা বিতরণ করা হলেও তাদের আহ্বানে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৩৩শত পরিবারের প্রায় ১৭ হাজার অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা নারী পুরুষ শিশু বস্তি সংলগ্ন কুতুপালং বনভূমির পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে আবাসস্থল তৈরিতে ব্যস্তদিন পার করছে। স্থানীয় বনবিভাগ তাদের নির্মিত ঝুঁপড়ি উচ্ছেদ করলেও তারা ফের ঝুঁপড়ি নির্মাণ করছে। এসব রোহিঙ্গাদের ঢালাও ভাবে ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরণে প্রশাসনের নির্দেশ থাকায় ইতিপূর্বে সড়কের মরিচ্যা যৌথ চেকপোষ্টের বিজিবি সদস্যরা প্রায় অর্ধ শতাধিক ত্রাণবাহি গাড়ী ফেরত পাঠিয়েছে।
বিজিবি’র সুবেদার মোঃ সাদেক জানান, এসব ত্রাণবাহি গাড়ীতে জেলা প্রশাসকের কোন অনুমতি ছিল না বিধায় গাড়ীগুলো ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফলে বেড়েছে গোপনে টাকা লেনদেনের খেলা। তাবলীগ জামায়াতের কিছু লোক বিলাস বহুল গাড়ী নিয়ে অবিনব কায়দায় এসব রোহিঙ্গাদের টাকা বিতরণের ফলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুতুপালং থেকে উখিয়া সদর পর্যন্ত সড়কের উভয় পার্শ্বে রোহিঙ্গা নারী শিশুর ভিড় পরিলক্ষিত হয় বলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব রোহিঙ্গাদের বস্তি এলাকায় সীমাবদ্ধতার ভিতরে রাখার চেষ্টা করেও পারা যাচ্ছে না। যেহেতু টাকার লোভে পড়ে এসব রোহিঙ্গারা বার বার রাস্তার ধারে চলে আসছে। এদের অনুসরণ করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একে জাহাঙ্গীর আজিজ একথার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ১৯৮০ দশকে যেসব রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে স্থায়ী বসবাস করছে তাদের একাধিক স্বজনেরা এখন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। চলমান রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় ওইসব প্রবাসী রোহিঙ্গারা মোটা অংকের টাকা পাঠাচ্ছে। আর এই টাকা বিলি হচ্ছে কুতুপালংয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা নারী শিশুদের মাঝে। ঘুমধুম বিজিবি’র নায়েব সুবেদার আব্দুল হাকিম জানান, হোয়াইক্যং উনচিপ্রাং সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন যানবাহনে এসব রোহিঙ্গারা আসছিল। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি যানবাহনে তল্লাসী চালিয়ে প্রায় ৩৩ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ শিশুকে আটক করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ১

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার ঠাকুরদিঘি এলাকায় লবণবাহী ট্রাকের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ...

জাসদ কার্যালয়ের জায়গায় ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা

বগুড়া শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ভেঙ্গে ফেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) ...

বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, আটক ৩৩

বান্দরবানের আলীকদম সীমান্তে বাড়ছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সংখ্যা। আজও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে শিশুসহ ৩৩ মিয়ানমারের নাগরিককে আটক ...